স্টাফ রিপোর্টার,চবি: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠেছে। ৩১ জানুয়ারি বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নির্যাতন সেলকে মাধ্যম করে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রসায়ন বিভাগের এক ছাত্রী। অভিযোগকারী লিখেছেন, ‘থিসিস শুরু হওয়ার পর থেকে আমার সঙ্গে তিনি বিভিন্ন রকমের যৌন হয়রানিমূলক আচরণ করেন। এর মধ্যে রয়েছে জোর করে হাত চেপে ধরা, শরীরের বিভিন্ন অংশে অতর্কিত ও জোর করে স্পর্শ করা, অসঙ্গত ও অনুপযুক্ত শব্দ ব্যবহার করা। এ ছাড়া কেমিক্যাল আনাসহ বিভিন্ন বাহানায় তিনি রুমে ডেকে নিয়ে জোর করে আমাকে জাপটে ধরতেন। তিনি আরো অভিযোগ করেন, ‘গেল ৬ জানুয়ারি আনুমানিক সকাল ১০টা নাগাদ আমি ল্যাবে একা কাজ করা অবস্থায় তিনি প্রবেশ করেন এবং তার ঠান্ডা লাগছে এই কথা বলে তিনি আমাকে জোর করে জড়িয়ে ধরেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নিই এবং আমার ল্যাবমেট এসে উপস্থিত হওয়ায় আমি কোনোরকম বেঁচে যাই। তখন আমি ও আমার ল্যাবের মেয়েরা একা ল্যাবে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। অভিযোগপত্রে বলা হয়, গত ১৩ জানুয়ারি আনুমানিক দুপুর ১২টা নাগাদ তিনি আমাকে কেমিক্যাল দেওয়ার বাহানা করে রুমে ডেকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তিনি আমাকে ফ্রিজ থেকে কেমিক্যাল বের করা অবস্থায় পেছন থেকে জোর করে জড়িয়ে ধরেন। তার হাত ও মুখ দিয়ে আমার স্পর্শকাতর অংশ ছুঁয়ে উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করেন। আমি তাকে ধাক্কা মেরে রুম থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে তিনি দরজা বন্ধ করে আমাকে ধর্ষণচেষ্টা করেন। আমি ধস্তাধস্তি করে রুম থেকে বের হয়ে আত্মরক্ষা করে পালিয়ে বাঁচি। তৎক্ষণাৎ বিষয়টি ল্যাবের বাকি দুজন মেয়েকে জানাই। তারাও এমন আচরণের শিকার হয়েছেন বলে আমাকে জানান। ওই ছাত্রী বলেন, পরদিন তিনি আমাকে ও ল্যাবমেট বাকি দুজনকে রুমে ডেকে নিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন, বিষয়টি কাউকে প্রকাশ না করার জন্য এবং তার সঙ্গে মধ্যস্থতা করার জন্য আমাদের তিনজনকে ২৫ মিনিটের বেশি সময় জোর করে তার রুমে আটকে রাখেন। আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া এ জঘন্যতম ঘটনার কারণে আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রচণ্ডভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। এমতাবস্থায় আমি আমার থিসিস ল্যাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং এই ল্যাবে পরবর্তী থিসিস কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এ বিষয়ে চবি প্রক্টর ড. নুরুল আজিম শিকদার বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। আমাদের একটা অভিযোগ কমিটি আছে। উপাচার্য মহোদয় এ বিষয়ে কমিটিকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রসায়ন বিভাগের ওই শিক্ষক বলেন, এটা তো সঠিক না। ইন্না লিল্লাহ। আমি এই রকম না। এই রকম তো কিছু হয়নি। এটা অসম্ভব। এটা তো মারাত্মক ডাহা মিথ্যা অভিযোগ। আমি তো একজন গবেষক। আমার ল্যাবে ছাত্রছাত্রীরা আছেন, আপনি একটু গিয়ে খোঁজখবর নেন। এরা তো আমার বাসায়ও আসা-যাওয়া করে। আমি একজন বয়স্ক লোক। মূলত রিসার্চ ঠিকমতো না করলে আমি একটু বকাবকি করি। আবার শিখিয়েও দিই। কয়েক দিন ধরে আমার মনে হচ্ছিল, আমার বকাবকির কারণে তাদের কেউ কেউ একটু অসন্তুষ্ট