স্টাফ রিপোর্টার: সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় আওয়ামী লীগ নেই বলে দাবি করে সাবেক সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মুহম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী বলেন, ওই এলাকা জামায়াতের দুর্গ হয়েছে । এমনকি বর্তমান সংসদ সদস্য এম এ মোতালেবের সঙ্গে জামায়াতের চুক্তি হয়েছে বলেও জেনেছেন তিনি! গতকাল ২১ মার্চ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এসব কথা বলেছেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়নে দুবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য নদভী বলেন, গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর থেকে এখন সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় নৌকা নাই, নৌকা নাই মানে আওয়ামী লীগ নাই। স্বতন্ত্র আছে, কিন্তু আমার মনে হচ্ছে, স্বতন্ত্রও নাই, জামায়াত আছে। এখন জামায়াতের এমন কোনো ক্যাডার নাই, যারা মাঠে নাই। বর্তমান সংসদ সদস্য এম এ মোতালেবের সঙ্গে স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের চুক্তি হয়েছে দাবি করে নদভী বলেন, ড. এনায়েত উল্লাহ আব্বাসীসহ যেসব বিতর্কিত আলেমকে আমি সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় আসতে দিইনি তাদের আনাগোনা এখন বেড়ে গেছে। জামায়াতের নেতাকর্মীরাও মাঠে সরব। আগামী উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান হবে জামায়াত থেকে—এমন চুক্তি হয়েছে বলে আমি জেনেছি। সংবাদ সম্মেলনে সাবেক এমপি নদভী আরো বলেন, ‘সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনে নৌকাকে ডুবানোর যাবতীয় ষড়যন্ত্রের নীল নকশা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করা হয় ঢাকায় বসা একজনের কলকাঠিতে। এখনো তার ইশারাতে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের রক্ত ঝরছে। প্রধানমন্ত্রী বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যাদের নৌকা প্রতীক দিয়েছিলেন তাদের অনেকে এখন উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায়ও যেতে পারেন না। এ যেন জামায়াত-শিবিরের আমল সাতকানিয়া লোহাগাড়ায় ফিরে এলো। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার পর দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে সাতকানিয়া-লোহাগাড়াকে জামায়াত-শিবিরের দুর্গ থেকে আওয়ামী লীগের দুর্গে পরিণত করেছিলাম। কিন্তু এখন সেই সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় স্বাধীনতার প্রতীক নৌকাকে পরাজিত করার জন্য জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে আঁতাত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মোতালেব নির্বাচন করেন। যেভাবেই হোক তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। এরপর থেকে এমপির প্রত্যক্ষ মদদে নৌকার পক্ষে কাজ করার অপরাধে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর ও মামলা করা হচ্ছে। এসব ঘটনার জন্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডা. আ.ম.ম মিনহাজুর রহমান ও চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগড়া) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা এম এ মোতালেবকে দায়ী করেন নদভী। নদভীর এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ নেই এমন কথা নদভী বলতে পারেন না। আওয়ামী লীগের রাজনীতি ক্ষণস্থায়ী নয়। একসময় সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় জামায়াতের আধিপত্য ছিল। সেই আধিপত্যের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ লড়াই-সংগ্রাম করেছে। সেই আন্দোলন সংগ্রামে অনেক নেতাকর্মীও নির্যাতিত হয়েছেন।