স্টাফ রিপোর্টার : কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলে ট্রলার থেকে ১০ জনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই জনকে গ্রেফতারের করেছে পুলিশ। ২৫ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকালে সদর মডেল থানায় মামলাটি করেছেন নিহত ট্রলার মালিক সামশুল আলম প্রকাশ সামশু মাঝির স্ত্রী রোকেয়া বেগম। তিনি চার জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫০-৬০ জনকে মামলার আসামি করেছে। একই দিন বিকাল সাড়ে ৫টায় কক্সবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ ঘটনায় মামলার এজাহারনামীয় ১ নম্বর আসামি কামাল প্রকাশ ওরফে বাইট্টা কামাল এবং ৪ নম্বর আসামি করিম শিকদারকে মহেশখালীর মাতারবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তারা মাতারবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। পুলিশ সুপার বলেন, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ড কোথায় ঘটেছে, তা তদন্ত করে উদঘাটন করা হবে। যে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা জানিয়েছে তারা। বুধবার আদালতে তাদের রিমান্ড চাওয়া হবে। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন এবং এর সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে জেলা পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ছয়টি লাশের পরিচয় জানা গেছে। সেগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি চার লাশের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য সদর হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হয়েছে। কারণ লাশগুলো এতই বিকৃত হয়ে গেছে যে, কে কার স্বজন তা নিশ্চিত করা কঠিন। এ জন্য সেগুলোর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় সিআইডির হেডকোয়ার্টার্সে পাঠানো হয়েছে। এর আগে রবিবার সকালে রশি দিয়ে ট্রলারটি টেনে নাজিরারটেক মোহনায় নিয়ে আসেন স্থানীয় জেলেরা। খবর পেয়ে দুপুর ২টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১০ জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। পরে লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। রবিবার বিকাল ও সন্ধ্যায় সদর হাসপাতালের মর্গে এসে স্বজনরা ১০ জনের লাশ শনাক্ত করেন। স্বজনদের দাবি, নিহতরা হলেন হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার রফিক মিয়ার ছেলে ট্রলার মালিক সামশুল আলম (২৩), শাপলাপুর ইউনিয়নের মিটাছড়ি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৮), জাফর আলমের ছেলে সওকত উল্লাহ (১৮), মুসা আলীর ছেলে ওসমান গনি (১৭), সাহাব মিয়ার ছেলে সাইফুল্লাহ (২৩), মোহাম্মদ আলীর ছেলে পারভেজ মোশাররফ (১৪), মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে নুরুল কবির (২৮), চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের কবির হোসাইনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৪), শাহ আলমের ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহান (৩৫) ও চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা এলাকার জসিম উদ্দীনের ছেলে তারেক জিয়া (২৫)। তবে পুলিশ বলছে, ১০ জনের মধ্যে ছয় লাশ শনাক্ত করতে পেরেছেন স্বজনরা। বাকি লাশগুলো স্বজনরা শনাক্ত করলেও তারা পুরোপুরি নিশ্চিত নন। কারণ লাশগুলো এতই বিকৃত হয়ে গেছে যে, কে কার স্বজন তা নিশ্চিত করা কঠিন। এ জন্য পরিচয় নিশ্চিতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।